বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
অর্থমন্ত্রী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে যাদের আবাসনের ব্যবস্থা নেই বা ঘরবাড়ি নেই তাদের জন্য আবাসন তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সবাইকে ঘরের ব্যবস্থা করবেন। এটা আমেরিকা বা গোটা ইউরোপেও সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এটা বিশ্বের কাছে একটি নজীর। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যাবে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষে ‘উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন সংসদে আমি যখন প্রথম আসি তখন বাজেটে ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়েছিল কৃষকের জন্য। সেখানে আরও কিছু সামাজিক নেট রাখা হয়েছিল। এটা তখন আমাদের মতো দেশের জন্য ছিল খুবই সাহসি সিদ্ধান্ত। এবার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন যাদের আবাসনের ব্যবস্থা নেই, ঘরবাড়ি নেই তাদের জন্য আবাসন তৈরীর। তিনি সবাইকে ঘরের ব্যবস্থা করবেন। এটা আমেরিকাতেও সম্ভব হয়নি, গোটা ইউরোপেও সম্ভব হয়নি। এমনকি পৃথীবির কোন দেশে নেই। প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন এবং তিনি এটা দেখভাল করবেন। এর চেয়ে বড় শক্তিশালী ভূমিকায় কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী অবতীর্ণ হতে পারেন, এটা কল্পনা করতেও ভয় লাগে। আর তিনি তা করবেন, সেটা আমাদের সবাইকে বিশ্বাস রাখতে হবে যোগ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে উপরের দিকে নিয়ে যেতে চাই। এ জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। ইতিহাসের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ইতিহাস কখনো মলিন হয় না। যেমনটা শুরু করেছিলেন আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি একটি দারিদ্রমুক্ত, ক্ষুদামুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তখন রাস্তাঘাট ছিলনা, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ। যদি জাতির জনক বেঁচে থাকতেন তাহলে বিশ্ব মানচিত্রে আমরা অনেকের উপরে থাকতাম। অর্থনীতিও অনেক উন্নত হতো। জাতির জনকের রেখে যাওয়া কাজই এখন করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, দেশকে সারা বিশ্বে অনেক সমাদৃত করেছেন। সেন্টার ফর ইকোনমিক্স রিসার্চের তথ্য তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যেই আমরা মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যাবো। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই ২০৩০ সালের স্বপ্ন পূরণ হবে এবং ২০৪১ এর স্বপ্নও বাস্তবায়ন করতে পারবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত হবে। সকলেই ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশনের যত চাহিদা শিক্ষা খাতে, সেগুলো তারা মোকাবেলা করতে পারবে। সেগুলোকে ব্যবহার করে জাতিকে আরও সামনে নিয়ে যাবে। যা সময়ের ব্যাপার বলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
আলোচনা সভার আয়োজক ডিজেএফবি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা অত্যন্ত দক্ষ, দীর্ঘদিন আপনাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে আমার। আপনাদের এ যাত্রা শুভ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আপনাদের সংগঠন অনেক সুন্দরভাবে কাজ করুক। দেশের মানুষকে বিকশিত করুক। এটাই আমার চাওয়া।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, তৃণমূলে ৭০-৮০ ভাগ মানুষ যারা বসবাস করেন, তারা উন্নয়ন চান। শুধু কথার উন্নয়ন নয়, দেখতে চান চোখে। সেতু-কালভার্ট দ্রুত দেখতে চান তারা। ঘরে বিদ্যুৎ তারা এই বেলায়ই চান। ভাতা বা অবলম্বন, পরিষ্কার পানির স্বপ্ন এগুলোই তারা চান।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার আহ্বান জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করুন। আমার পক্ষ থেকে পুরোপুরি সাহায্য-সমর্থন পাবেন। আমরা সবাই চাই তথ্যপ্রবাহ অবাধ হোক। এতে আমাদের লাভ, শুধু আপনাদের লাভ না। আপনারা যে ক’দিন আমাদের সঙ্গে কাজ করবেনÑ আমি বলছি, সম্পূর্ণ সহযোগিতা দেয়া হবে।
ডিজেএফবি’র সভাপতি এফ এইচ এম হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের কার্যনির্বাহী সদস্য সুশান্ত সিনহা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. সাইফুল আলম ও এএফপির বাংলাদেশের ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব নূরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সদস্য (সচিব) আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বেগম ফাতিমা ইয়াসমিন প্রমুখ।